নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের সরকারি দলের রাজনীতিবিদদের মধ্যে দুটি ভাগ। তারা আবার বড় বড় কথা বলে। আমাদের মধ্যে নাকি বিভক্তি। আমাদের মধ্যে কোন বিভক্তি নেই। বিভক্তি তাদের মধ্যে। কারন একটি গ্রুপ লুটপাট করে খাচ্ছে, তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন করে যাচ্ছে। আরেকটা গ্রুপ যারা ভাল তারা তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে পারছে না।
শনিবার (১১ মার্চ) দুপুর ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, তারা হুমকি দিচ্ছে বিএনপির সমর্থকদের পাঁচ মিনিটে খুঁড়ে বের করে ফেলবে। পাঁচ মিনিটে ধ্বংস করে দিবে। অনেক কথাই বলে, আপনাদের আমরা যেমন ভয় পাই জনগণও ভয় পায়। কারণ আপনারা সদর্পে ঘোষণা করে বলেন আপনাদের চরিত্র কী। এই ভয়ের কারণে জনগণকেও এখন আপনাদের সরকার ভয় পেতে শুরু করেছে। জনগণ একটি সুযোগ পেলেই আপনাদের বিতাড়িত করবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
সাবধান হয়ে যান। অতীতে যা করেছেন তার ফল পেয়েছেন। কাজেই এগুলো বাদ দিয়ে দিন। নারায়ণগঞ্জ কারও ব্যক্তিগত সম্পদ না। মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছি। কারও রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না। আপনারা কর্মসূচি দিলে লোক পান না। গার্মেন্টস বন্ধ করে লোক নিয়ে আসতে হয়।এসকল বক্তব্য শুনে আপনাদের দলের লেকজনও হয়রান।
নারায়ণগঞ্জে আপনারা দেখবেন সরকারি প্রশাসনে যারা আছে তারাও বিভক্ত। একদিকে আছে সন্ত্রাস চাঁদাবাজির পক্ষের শক্তি আরেকদিকে আছে ভাল মানুষ। সংখ্যয় তারা অল্প, কিন্তু তারা আজ সংগঠন করতে পারে না। মানুষের সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারে না। মানুষ তাদের লজ্জা দেয়।
প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের ন্যয়ের পক্ষে থাকার কথা। আপনাদের অন্যায় ভাবে মিথ্যা মামলা করতে হয়। আপনারা বুঝতে পারছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার চাপে আপনাকে কতবড় অন্যয় কাজ করতে হচ্ছে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার বদলে আপনারা অন্যায় করছেন। এর থেকে বেরিয়ে আসুন। নয়ত আপনাদেরও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
আপনারা বলেন বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় না। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা সরকারের পরিবর্তন চাই। আপনাদের মত ভোট ডাকাতি করে আমরা ক্ষমতায় আসতে চাই না। অনেকে বলে বিএনপি যত আন্দোলন সংগ্রাম করুক, আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আমি তাকে প্রশ্ন করতে চাই, আমরা কী ক্ষমতার জন্য আন্দোলন করছি। আমরা জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করছি। অন্তবর্তীকালীন একটি নির্বাচন দিন। দেখি জনগণ কাকে চায়।
যারা একদিন জনগণের পক্ষে আন্দোলন করেছে তারা আজ ক্ষমতায় গিয়ে সম্পদের লিপ্সায় নিজেদের চরিত্রকে বিসর্জন দিয়ে আজ তারা স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। একারনেই বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা আছে তাদের এ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে হচ্ছে। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
এই আন্দোলন সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষর আন্দোলন। এ সরকার জনগণকে ভয় পায়। তারা জনগণের বিরুদ্ধে এমন সব কাজ করেছে যে জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মানুষ এই সরকারের পরিবর্তন চায়।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের কল্যানের জন্য সরকারী প্রতিষ্ঠান। এ সরকার প্রশাসনকে দলীয় প্রশসন হিসেবে পরিনত করেছে। প্রশাসনের অনেকে লুটপাট করে খায়। প্রশাসনকে তারা দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। এক ভাগে আছে দুর্নীতিবাজ আরেক ভাগে সৎ লোকজন। সেই সৎ লোকগুলো আজ এই দুর্নীতিবাজদের জন্য কথা বলতে পারে না। প্রশাসন ধ্বংস হলে দেশ চলবে কীভাবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সহ সভাপরি রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান, আড়াইহাজার পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ প্রমুখ।