নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’ রেষ্টুরেন্টের গুলিবিদ্ধ ম্যানেজার শফিউল আলম কাজল (৫০ ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিচুর রহমান।
নিহত শফিউল আলম কাজল সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের শাহ আলমের ছেলে। তিনি বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিদ্যুৎ বিল ও পানির সংযোগকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় আঙ্গুরা শপিং কমপ্লেক্স ভবনের মালিক আজাহার তালুকদারের অস্ত্রের গুলিতে গুরুতর আহত হন ভাড়াটে রেস্টুরেন্ট ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র ম্যানেজার শফিউল আলম কাজল ও কর্মচারি জনি।
তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় কাজলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মার্কেট মালিক আজাহার তালুকদার ও তার ছেলেকে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক করে।
এ ঘটনায় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ওই রেষ্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর আলী বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত মার্কেট মালিক আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠায় ।
পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বীথির আদালত মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) শুনানির দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র মালিক শুক্কুর গুলি বর্ষনের ঘটনার রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ভবন মালিক আজহার তালুকদার এসে বলেন, পানির বিল বাবদ আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা ১০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছি।
আমি বললাম ১০ টাকা কেনো দিবো? আমি তো আপনার কাছ থেকে দোকান নেই নাই। আমার বাড়িওয়ালা আপনার ভাই আজিজুল হক। তার কাছ থেকে আমি দোকান ভাড়া নিয়েছি। আর আমি তো পানির বিল প্রতিমাসে দিয়েই যাই। পানিসহ আমার ৮০ হাজার টাকা ভাড়া। পানির জন্য ৫ হাজার, আর ভাড়া ৭৫ হাজার।
এসব নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাহার আমাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। পরে আমিও গালি দেই। এরপর সে বলে দাড়া আসতাছি। একথা বলে সে চলে যায়। পরক্ষনে এসে সে গুলি করে। এতে আমার ম্যানেজারসহ ২জন আহত হয়েছে।
সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আইনগত পক্রিয়া শেষে নিহতের স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে।
বাবা ছেলে রিমান্ডে
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় রেষ্টুরেন্টে গুলিবিদ্ধ ম্যানেজার মো. কাজল (৫৫) নিহতের ঘটনায় মো. আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনের বিরুদ্ধে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে আসামিদের হাজির করে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে দুইদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
একই সাথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ৩০২ ও ৩৪ দ্বারা সংযুক্ত করে হত্যা মামলার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করলে আদালতে তা মঞ্জুর করেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক ওসি মো. আসাদুজ্জামান আসাদ ও বাদী পক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের সাবেক পিপি এড. ওয়াজেদ আলী খোকন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. কাজল মারা যান।
এর আগে রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাষাঢ়ার আঙ্গুরা প্লাজায় ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’ নামে রেস্টুরেন্টে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়েন ভবন মালিক আজাহার তালুকদার। এতে রেষ্টুরেন্টের ম্যানেজার সফিউর রহমান কাজল ও কর্মচারী জনি গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে কাজলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনকে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এঘটনায় রাতেই রেষ্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর আলী বাদী হয়ে ভবন মালিক আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনকে আসামি সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র মালিক শুক্কুর জানান, ভবন মালিক আজহার তালুকদার এসে বলেন পানির বিল বাবদ আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা ১০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছি। আমি বললাম ১০ টাকা কেনো দিবো? আমি তো আপনার কাছ থেকে দোকান নেই নাই।
আমার বাড়িওয়ালা আপনার ভাই আজিজুল হক। তার কাছ থেকে আমি দোকান ভাড়া নিয়েছি। আর আমি তো পানির বিল প্রতিমাসে দিয়েই যাই। পানিসহ আমার ৮০ হাজার টাকা ভাড়া। পানির জন্য ৫ হাজার, আর ভাড়া ৭৫ হাজার।
এসব নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাহার আমাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। পরে আমিও গালি দেই। এরপর সে বলে দাড়া আসতাছি। একথা বলে সে চলে যায়। পরক্ষনে এসে সে গুলি করে। এতে আমার ম্যানেজারসহ ২জন আহত হয়।