প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আমূল পাল্টে দিয়েছে। দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না।’ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপগঞ্জের পূর্বাচল সেক্টর ৪-এ দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো। এর আগে মেট্রোরেল উপহার দিয়েছি। সেটি ওপর দিয়ে যাবে। এবার মাটির নিচ দিয়ে যাবে পাতালরেল। বাংলাদেশে এ ধরনের আয়োজন প্রথম।’
মেট্রোরেলের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছি। এই কাজ যখন শুরু করতে যাই তখন জঙ্গির উত্থান হলো। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করা হয়। ৭ জন জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়, যারা মেট্রোরেলের কাজে যুক্ত ছিলেন। আমি তাদের স্মরণ করি। এই ঘটনার পরও জাপান সরকার তাদের সহযোগিতার হাত গুটিয়ে নেননি। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। একটা জাতির জন্য এই সময় কিছুই না। তিনি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছরে আর কতটুকু করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানিরা ২৭৮টি রেল ব্রিজ ধ্বংস করেছিল, ২৭০টি সড়ক ব্রিজ ধ্বংস করে। এক কোটি শরণার্থী, তিন কোটি গৃহহারা, একটা টাকা রিজার্ভ নেই। সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রা শুরু করে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তিনি ব্যাপক কর্মসূচি নেন।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আমার মা, ছোট তিন ভাইকে হত্যা করা হলো। আমার চাচাকে হত্যা করা হলো। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আর আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। ছয় বছর রিফিউজি হিসেবে বিদেশে থাকতে হয়েছে। আমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আওয়ামী লীগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার অবর্তমানে আমাকে সভাপতি করায়। অনেক বাধা ছিল। শুধু জনগণের ওপর ভরসা করে আমি বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম। শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দেশে ফিরে এসেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৪ বছরে এই দেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এবার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে।’