কিছু বললেই এ সরকার মামলা দিয়ে দেয় মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার খারাপ—এ কথাটা বললে তারা মামলা দিয়ে দেয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যায় না। যদি কথা বলাই না যায় তাহলে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম কেন?
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। পাকিস্তান আমাদের সঙ্গে জুলুম করত, আমরা তাদের বলেছি আসসালামু আলাইকুম। অথচ তাদের মতই শাসনব্যবস্থা কায়েম করছে এ সরকার। তবে তা আর করতে দেওয়া হবে না।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিস্ট সরকার চৌদ্দ বছর ধরে দেশটাকে উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বোকা বানাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, তথাকথিত উন্নয়নের নামে জনগণকে নিয়ে যে ইতরামি আর মশকরা করা হচ্ছে তা বন্ধ করুন।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নির্বাচন চায়। তবে নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে ফাঁদ পাতানো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, গরিব আরও গরিব হচ্ছে। আর আওয়ামী লীগের নেতারা ফুলে ফেঁপে বড়লোক হচ্ছে। যাদের জুতা ছিল না। তারা এখন গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়—এটাই হলো উন্নয়ন। জনগণকে নিয়ে এইসব ফাজলামি আর চলবে না, জনগণকে নিয়ে মশকরা করা চলবে না। বন্ধ করুন ভণ্ডামি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করা হয়েছে সেই আন্দোলনে জয়লাভ করলে বিএনপি একটি জাতীয় সরকার গঠন করবে। যারা আন্দোলন করবে সেই জাতীয় সরকারে দেশ পরিচালনায় সব দলের নেতারা প্রতিনিধিত্ব করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার সবকিছুর দাম বাড়িয়েছে। আপনাদের শীতে কষ্ট, ভাতের কষ্ট। চালের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে। গ্যাসের দাম, ডালের দাম, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে কষ্টে রেখেছে। গরিব আরও গরিব হচ্ছে, আর তারা ধীরে ধীরে ফুলছে। ব্যাংকের ঋণ নেওয়ার মানে বিদেশে টাকা পাচার করছে। আমরা আমাদের ২৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছি। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। তবে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। কারণ তারা কাউকে ভোট দিতে দেয় না। তাদের কথা হলো, আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব। আগামীতে আর এরকম করতে দেওয়া হবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের চেয়ারপারসনের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। হাজি সেলিমের জামিন হয়, ক্যাসিনো সম্রাটের জামিন হয়, ১৭ বছর কারাদণ্ড হওয়ার পর মোফাজ্জল হোসেন মায়া আওয়ামী লীগের বড় নেতা হয়ে ঘুরে বেড়ায়। অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন হয় না।
তিনি আরও বলেন, জনগণের কোনো মূল্য তাদের কাছে নাই। জোর জবরদখল করে বুকের ওপর বসে আছে জগদ্দল পাথরের মতো এ সরকার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, দপ্তর সম্পাদক মামুন উর রশিদ, অর্থ সম্পাদক শরিফ ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন তুহিনসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। পরে তিনি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ পরিষদের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।